গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার বিস্ময়কর উপকারিতা ও সম্ভাব্য অপকারিতা
পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার উপকারিতা
- লেবুর পুষ্টিগুণ
- গর্ভাবস্থায় কিভাবে লেবুর রস তৈরি করে খাবেন
- গর্ভাবস্থায় দিনের কোন সময় লেবুর রস পান করা ভালো
- গর্ভাবস্থায় লেবুর রস পান করা কি নিরাপদ
- গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
- গর্ভাবস্থায় লেবু খেলে যেসব রোগ থেকে মুক্তি পাবেন
- গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর
- গর্ভাবস্থায়ী লেবুর বিকল্প হিসেবে কি খাবেন
- শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার উপকারিতা
লেবুর পুষ্টিগুণ
লেবুর পুষ্টিগুণ | মিলি গ্রাম | ||
---|---|---|---|
ক্যালোরি | ২৯ | ||
ফ্যাট | ০.৩ | ||
সোডিয়াম | ২ | ||
পটাশিয়াম | ১৩৮ | ||
কার্বোহাইড্রেট | ৯ | ||
ফাইবার | ২.৮ | ||
সুগার | ২.৫ | ||
প্রোটিন | ১.১ | |
গর্ভাবস্থায় কিভাবে লেবুর রস তৈরি করে খাবেন
- ১ থেকে ২টি তাজা লেবু নিতে হবে
- ২ থেকে ৩ কাপ জল নিতে হবে
- ১ চামচ লবণ (আপনার স্বাদ অনুযায়ী)
- ১ থেকে ২ চামচ মধু বা চিনি দিতে পারেন
- সর্ব প্রথম আপনাকে লেবুগুলো ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর আপনাকে লেবুগুলো কাটতে হবে।
- এবং একটি পরিষ্কার আকাশে এক গ্লাস জলভড়তে হবে। এবং আপনি যেই লেবুগুলো কেটে রেখেছেন ওইগুলো চিপে তার রস জলের মধ্যে দিতে হবে।
- লেবুর রস জলের মধ্যে দেওয়ার পরে আপনাকে এক চামচ লবণ দিতে হবে ওই লেবুর রসের গ্লাসের মধ্যে।
- তারপরে আপনাকে এক থেকে দুই চামচ মধু বা চিনি দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে।
গর্ভাবস্থায় দিনের কোন সময় লেবুর রস পান করা ভালো
গর্ভাবস্থায় লেবুর রস পান করা কি নিরাপদ
গর্ভাবস্থায় লেবুর রস খাওয়া নিরাপদ। কিন্তু আপনাকে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যে অতিরিক্ত কোন কিছুই খাওয়া ভালো নয় তার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত খাবার ফলে আপনার এমাল্ড এর ক্ষতি করতে পারে। অনেক গর্ভবতী মহিলার অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে থাকে। যদি আপনার এইসব সমস্যা থেকে থাকে তাহলে লেবুর রস পান করার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে আপনাকে।
গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানুন এবং এ বিষয়ে জানা খুবই জরুরী। কারণ গর্ভাবস্থায় আপনি কি খাবেন না খাবেন সেটা নিয়ে আপনার শিশু সন্তানের উপরে পড়বে। আপনি যদি ভালো কিছু পুষ্টিকর খাবার খান সেটার উপকার আপনিও আপনার সন্তান পাবে। আর আপনি যদি পুষ্টিকরবিহীন খাবার খান তাহলে আপনার শিশু সন্তান বৃদ্ধি পেতে সমস্যা হবে এর ফলে অনেক সমস্যা দেখা যায়।
গর্ভাবস্থায় আপনি যেটাই খান না কেন তার আগে আপনাকে সেই বিষয়ে ধারণা নিতে
হবে ডাক্তারের কাছে থেকে। গর্ভাবস্থায় যেসব সমস্যা হতে পারে বেশি
লেবুর রস খাবার ফলে। গর্ভাবস্থায় লেবুর রস খাবার ফলে যেসব ক্ষতিকর
লক্ষণ গুলো দেখা যায় তা নিচে লেখা হলো।
এসিডিটিঃ লেবুর রসের উচ্চ মানের অ্যাসিডেক রয়েছে। আর এই লেবুর রস খাবার ফলে আপনার শরীরে জ্বালাপোড়া শুরু করবে। এর ফলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। যার কারণে গর্ভ অবস্থায় আপনি যেটাই খাবেন তার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে খাওয়া উচিত হবে আপনার।
এলার্জিঃ গর্ভাবস্থায় লেবুর রস খাবার ফলে এলার্জির লক্ষণ দেখা যেতে
পারে। যেমন চুলকনি, হাঁচি, কাশি ইত্যাদি আরো অনেক হলো লক্ষণ দেখা
যেতে পারে। এর জন্য গর্ভাবস্থায় আপনার লেবুর রস এড়িয়ে চলার উচিত
হবে। আর গর্ভাবস্থায় যেটাই খাবেন না কেন আপনি তার জন্য ডাক্তারের
পরামর্শ গ্রহণ করাই উচিত হবে আপনার।
পেটের সমস্যাঃ গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলার পেটের সমস্যা হয়ে থাকে আর আপনি যদি লেবুর রস পান
করেন। পেটের সমস্যা থাকলে যার ফলে আপনার ডায়রিয়া হয়ে যেতে
পারে তাই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে আপনার লেবুর রস খাওয়া
উচিত। আবারো অনেক মহিলার গর্ভাবস্থায় পেটের ব্যথা হয়ে থাকে। আর
এই লেবুর রস এ রয়েছে উচ্চমানের অ্যাসিডেক। যার ফলে আপনার পেট ব্যথা
দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণ লেবুর রস পান
করা বর্জন করতে হবে।
গর্ভাবস্থায় লেবু খেলে যেসব রোগ থেকে মুক্তি পাবেন
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ লেবুর রস যদি পানির মধ্যে দিয়ে খাওয়া হয় তার ফলে আপনার জ্বর সর্দি কাশি ইত্যাদি রোগ ভালো হয়ে থাকে। আর আপনি যদি একগ্লাস লেবু জল খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীর সুস্থ সবল হয়ে থাকবে।
- বমি ভাব নিয়ন্ত্রণ করেঃ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা ও বোনেরা বমি বমি ভাব হয়ে থাকে। আর বমি করলে শরীর অনেক খারাপ ও অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। ২০১৪ সালের গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে লেবু খাওয়ার ফলে বমি ভাব কমাতে সাহায্য করে।
-
বদহজমঃ অনেকেরই অতিরিক্ত খাবার ফলে বদ
হজম হয়ে থাকে। যার ফলে গ্যাস্ট্রিকের আরো অন্যান্য সমস্যা হয়ে
থাকে। আপনি যদি সকালের খালি পেটে এক গ্লাস লেবুর শরবত খেয়ে
থাকেন। তাহলে আপনার গ্যাসের সমস্যা আর হবে না বদহজম থেকেও মুক্তি
পাওয়া যায় এর ফলে।
গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর
গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর জানা সবারই প্রয়োজন। কারণ আমরা একটা জিনিস খাবো সেটা ভালো নাকি খারাপ সেটা আমাদের জানা দরকার আর এই দেশে আমাদের মাথায় অনেক প্রশ্ন আসতে পারে আর এটা স্বাভাবিক। তো চলুন আমরা জেনে নেই যে কি কি প্রশ্ন থাকতে পারে সবার পূর্বে।
প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় কি লেবু খাওয়া যাবে?
উত্তরঃ হ্যাঁ গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়া নিরাপদ। কিন্তু আপনাকে পরিমাণ মতো খেতে হবে অধিক খেলে তার সাইড ইফেক্ট রয়েছে। তাই কোন কিছু অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না গর্ভাবস্থায় এটি আপনার মাথায় রাখতে হবে।
প্রশ্নঃ সকালে কি খালি পেটে লেবুর শরবত খাওয়া যাবে?
উত্তরঃ হ্যাঁ সকালে খালি পেটে লেবুর শরবত খাওয়া যাবে। কারণ আপনি যদি রাতে খাবার খেয়ে থাকেন বেশি তাহলে আপনার বদহজম হতে পারে। আর আপনি যদি সকালে খালি পেটে লেবুর শরবত পান করে থাকেন তাহলে অনেক সমস্যা থেকে রোগ প্রতিরোধ মুক্ত করে থাকে।
প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার ক্ষতিকর দিক গুলো কি?
উত্তরঃ এই প্রশ্নটি সবার মাথায় আসে যে ক্ষতিকর দিকগুলো কি সেগুলো অনেকেরই ই অজানা কিন্তু সবার এই কথাটি জানা খুবই প্রয়োজন। আপনার যদি এলার্জি থেকে থাকে তাহলে লেবুর রস গর্ভাবস্থায় পান না করাই উচিত হবে আপনার। আর লেবুতে রয়েছে অ্যাসিডেক যার ফলে এসিডিটি বা গ্যাসটিক এর সমস্যা হতে পারে। সেজন্যে অতিরিক্ত লেবুর রস পান করা যাবে না। প্রয়োজনমতো পান করতে হবে।
গর্ভাবস্থায়ী লেবুর বিকল্প হিসেবে কি খাবেন
গর্ভাবস্থায়ী লেবুর বিকল্প হিসেবে কি খাবেন এই প্রশ্ন সবারই মাথায় আসে। কারণ আপনার যদি এলার্জি থেকে থাকে তাহলে লেবুর রস খেলে সেগুলো বেড়ে যাবে। যার ফলে মা ও শিশু সন্তান দুইজনেরই ক্ষতি হয়। তার জন্যই যদি আপনার এই সব সমস্যা থেকে থাকে তাহলে লেবুর রসের বিকল্প হিসেবে অন্যান্য ফল খেতে হবে। তো কি ফল খেতে হবে আপনারা জানেন না তাই চলুন আমরা জেনে নেই কি কি ফল খাওয়া যেতে পারে।
কমলাঃ গর্ভাবস্থায় লেবুর বিকল্প হিসেবে আপনারা কমলা খেতে পারেন। কারণ কমলাতে রয়েছে ভিটামিন সি এবংঅ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। আর এ কমলা খেতে অনেক সুস্বাদু। লেবুর বিকল্প হিসেবে আপনারা কমলা বেছে নিতে পারেন।
কাজুবাদামঃ গর্ভাবস্থায় লেবুর বিকল্প হিসেবে আপনারা
কাজু বাদাম বেছে নিতে পারেনা। কারণ কাজল বাদামে
রয়েছে। ক্যালোরি, প্রোটিন, ফাইবার, সুগার, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ইত্যাদি
আরো অনেকগুলো উপাদান রয়েছে এই কাজ বাদামে। তারপর বড় ব্যবস্থায় কাজে
লাগানো অনেক রোগ প্রতিরোধ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আর এ কাজু বাদাম
খেতে অনেক সুস্বাদু।
কিসমিসঃ গর্ভাবস্থায় কিছু খাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ
উপাদান। থেকে রয়েছে ক্যালোরি, প্রোটিন, ফাইবার, সুগার, ইত্যাদি
আরো অনেকগুলো উপাদান রয়েছে এই কিসমিস এ। আপনি যদি প্রতি রাতের
বেলা দুধের সাথে কিসমিস ভিজিয়ে খান। তাহলে আপনার শরীরে অনেকগুলো
পরিবর্তন দেখা যাবে। যেমন আপনার চেহারা আগের থেকে অনেক সুন্দর
দেখাবে। গর্ভাবস্থায় লেবুর পরিবর্তে আপনারা দুধের সাথে কিসমিস
খেতে পারেন বিকল্প হিসেবে।
শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার সবারই আগ্রহ থেকে থাকে। আর এই আর্টিকেলে সম্পন্ন এ বিষয়ে লেখা আছে। আপনি যদি সম্পূর্ণ এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি বুঝতে পারবেন। যে গর্ভাবস্থায় লেবু খাবার যেসব উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। তো আমি আশা করি আপনারা সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়েছেন। তার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এসআর এটুজেড এরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।;
comment url