লাল চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত

লাল চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকে জানেনা। কিন্তু অনেক মানুষ আছে লাল চা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে চাই। কারণ এই জিনিস খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে কি কি পরিবর্তন হয় এগুলো আমাদের জানতে হবে। 
লাল-চা-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা-বিস্তারিত-জানুন
এগুলো জানার ফলে আমাদের অনেক লাভবান হবে। কারণ প্রতিটি মানুষেরই স্বাস্থ্য সচেতন থাকা খুবই জরুরী। আপনিও যদি এ বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন, চলুন জেনে নেওয়া যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ লাল চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

লাল চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

লাল চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। লাল চা (রেড টি) বা রুইবোস চা (Rooibos Tea) মূলত দক্ষিণ আফ্রিকার একটি জনপ্রিয় চা। এটি ক্যাফেইন-মুক্ত এবং স্বাস্থ্যসম্মত বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে, তবে কিছু অপকারিতাও রয়েছে। নিচে লাল চা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতার তালিকা দেওয়া হলো। 

লাল চা খাওয়ার উপকারিতাঃ 
  • ১. ক্যাফেইন-মুক্ত: লাল চা ক্যাফেইন-মুক্ত, তাই এটি রাতে বা যেকোনো সময় খাওয়া যায়, যা ঘুমের সমস্যায় সহায়ক হতে পারে।
  • ২. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য: লাল চায় রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরকে ক্ষতিকর কেমিক্যাল থেকে রক্ষা করে এবং শরীরের কোষের ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে।
  • ৩. হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য: লাল চায় আছে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং কপার, যা হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে।
  • ৪. হজমের উন্নতি: লাল চা হজমে সহায়ক হতে পারে এবং পেটের সমস্যা যেমন অম্বল বা গ্যাসের উপশমে সাহায্য করতে পারে।
  • ৫. প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো: লাল চায় রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন সি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
  • ৬. ত্বকের জন্য ভালো: অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি থাকার কারণে এটি ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
লাল চা খাওয়া অপকারিতাঃ 
  • ১. অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়াঃ লাল চা বেশি পরিমাণে খাওয়া হলে এতে থাকা কিছু উপাদান অতিরিক্ত পরিমাণে শোষিত হতে পারে, যা পেটের অস্বস্তি বা গ্যাসের সৃষ্টি করতে পারে।
  • ২. আয়রন শোষণ কমানোঃ লাল চা অতিরিক্ত খেলে এটি শরীরে আয়রনের শোষণ কমিয়ে দিতে পারে, তাই যারা আয়রন কম থাকেন বা এনিমিয়া (রক্তস্বল্পতা) আক্রান্ত, তাদের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
  • ৩. দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারঃ খুব দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিদিন একাধিক কাপ লাল চা খাওয়া হলে এতে থাকা কিছু উপাদান শরীরে জমা হয়ে যেকোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।
সারাংশে, লাল চা খাওয়ার উপকারিতা অনেক, তবে অল্প পরিমাণে এবং ভারসাম্যপূর্ণভাবে খাওয়া উচিত, যাতে এর অপকারিতাগুলো কমানো যায়। আর মূলত এগুলো হলো লাল চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। 

প্রতিদিন চা খাওয়ার নিয়মাবলি

প্রতিদিন চা খাওয়ার নিয়মাবলি রয়েছে সেগুলো আমরা অনেকে জানিনা। প্রতিদিন চা খাওয়ার কিছু নিয়মাবলি রয়েছে, যা চা খাওয়ার অভ্যাসকে আরও উপকারী এবং সুস্থ রাখে। চা খাওয়ার সময় কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা প্রয়োজন, যেমন হল।  
 
  • ১. সঠিক সময় চা খাওয়াঃ 
  • সকাল বা দুপুরেঃ সকালে বা দুপুরে চা খাওয়া উত্তম। সকালে খালি পেটে চা খাওয়া পরিহার করা উচিত, কারণ এতে পেটের এসিড বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • খাওয়ার পর চাঃ খাওয়ার পরে চা খাওয়াটা ভালো। এতে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয়।
  • রাতে চা পরিহারঃ রাতে অতিরিক্ত চা না খাওয়াই ভালো, কারণ এতে ঘুমের সমস্যা হতে পারে, বিশেষত যদি চায়ে ক্যাফেইন থাকে।
  • ২. চায়ের পরিমাণঃ মধ্যম পরিমাণে চা খাওয়া: দৈনিক ২-৩ কাপ চা খাওয়া সাধারণত উপকারী। তবে অতিরিক্ত চা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত, কারণ এতে শরীরের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষত যদি চায়ে ক্যাফেইন থাকে।
  • ৩. চায়ে মিষ্টি কম রাখাঃ চায়ে অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি না যোগ করা ভালো। বেশি চিনি খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, যেমন টাইপ ২ ডায়াবেটিস বা ওজন বৃদ্ধি।
  • ৪. শুদ্ধ পানি ব্যবহারঃ চা তৈরি করার সময় সঠিক পরিমাণে পরিষ্কার এবং শুদ্ধ পানি ব্যবহার করা উচিত। অপরিষ্কার পানি বা খারাপ পানি চায়ের স্বাদ বা গুণাগুণ খারাপ করতে পারে।
  • ৫. উচ্চমানের চা পাতা নির্বাচনঃ ভালো মানের চা পাতা ব্যবহার করা উচিত, যাতে তা স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু হয়। নিম্নমানের চা পাতা খেলে অনেক সময় তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • ৬. চায়ে অতিরিক্ত দুধ না দেওয়াঃ অতিরিক্ত দুধ যোগ করলে তা চায়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণাবলীর কিছুটা হ্রাস করতে পারে। তাই একটু কম দুধ ব্যবহার করা ভালো।
  • ৭. চা পানের পর পানি পান করাঃ চা খাওয়ার পর এক গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করা উচিত, যাতে শরীরের আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং শরীরের ক্ষতিকর উপাদান সহজে বের হয়ে যেতে পারে।
  • ৮. হালকা খাবারের সঙ্গে চাঃ চায়ের সঙ্গে ভারী খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন। চা সাধারণত হালকা স্ন্যাকস বা খাবারের সাথে খাওয়া উচিত। ভারী খাবারের সাথে চা খাওয়া শরীরের হজম প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
  • ৯. ক্যাফেইন গ্রহণের সীমাবদ্ধতাঃ চায়ে যদি ক্যাফেইন থাকে, তবে অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ এটি নানান ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যেমন অনিদ্রা, উদ্বেগ বা অস্বস্তি।
  • ১০. বিশ্রাম নেওয়াঃ প্রতিদিন চা পান করার পর বিশ্রাম নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যদি এটি গরম চা হয়। শরীরের প্রশান্তি এবং সুস্থতা বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম প্রয়োজন।
  • ১১. নতুন অভ্যাস গঠনঃ নতুন ধরনের চা (যেমন: গ্রিন টি, হার্বাল টি, ব্ল্যাক টি ইত্যাদি) খাওয়া বা নতুন চায়ের স্বাদে অভ্যস্ত হতে পারেন, তবে তা সঠিক নিয়মে করতে হবে যাতে শরীরের উপকারিতায় কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।
  • ১২. পাত্র এবং চায়ের তাপমাত্রাঃ চা খাওয়ার জন্য পরিষ্কার এবং উপযুক্ত পাত্র ব্যবহার করা উচিত। এছাড়া, চায়ের তাপমাত্রা সঠিকভাবে বজায় রাখা উচিত; খুব গরম চা খাওয়ার ফলে মুখ বা গলার ক্ষতি হতে পারে।
এই নিয়মগুলো অনুসরণ করলে চা খাওয়ার অভ্যাস শরীরের জন্য আরও উপকারী হতে পারে।

চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিতা 

চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিতা চিনি ছাড়া চা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে, যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বেশ লাভজনক। চিনি ছাড়া চা খাওয়ার কিছু প্রধান উপকারিতা নিচে তুলে ধরা হলোঃ 
  • ১. ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ চিনি ছাড়া চা খেলে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ এড়িয়ে চলা যায়। চিনি আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ করে, যা ফ্যাটের রূপে জমা হতে পারে। চিনি ছাড়া চা খেলে আপনি সহজেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।
  • ২. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তাঃ চিনি খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চিনি ছাড়া চা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, এবং ইনসুলিনের মাত্রাও সঠিক থাকে, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • ৩. হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যঃ চিনি ছাড়া চা খাওয়ার ফলে উচ্চ কোলেস্টেরল এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়। চিনি যেহেতু রক্তে ফ্যাটের মাত্রা বাড়াতে পারে, তাই চিনি না খাওয়ার মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো যায়।
  • ৪. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণাবলী বজায় থাকেঃ চা বিশেষ করে গ্রিন টি এবং ব্ল্যাক টি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা শরীরের ক্ষতিকর কেমিক্যালস বা ফ্রি র্যাডিক্যালস থেকে সুরক্ষা দেয়। চিনি যোগ করলে এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের কার্যকারিতা কিছুটা কমে যেতে পারে, কিন্তু চিনি ছাড়া খেলে আপনি পুরোপুরি এসব উপকারিতা উপভোগ করতে পারেন।
  • ৫. পেটের সমস্যা কমানোঃ চিনি ছাড়া চা খেলে পেটের গ্যাস, অ্যাসিডিটি বা অম্বলের সমস্যা কমে। অতিরিক্ত চিনি পেটের এসিডিটির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, কিন্তু চিনি ছাড়া চা খাওয়ার ফলে পেটের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।
  • ৬. শক্তি বৃদ্ধিঃ চা ক্যাফেইন ধারণ করে, যা শরীরে শক্তি এবং সতেজতা প্রদান করে। চিনি ছাড়া চা খেলে ক্যাফেইনের প্রভাব বেশি থাকে, এবং এটি দীর্ঘ সময় ধরে আপনাকে শক্তি প্রদান করে।
  • ৭. ত্বকের জন্য ভালোঃ ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ এটি শরীরের ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা ত্বকের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। চিনি ছাড়া চা ত্বকের জন্য উপকারী, কারণ এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • ৮. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়কঃ চিনি ছাড়া চা খাওয়ার মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। চিনি উচ্চ রক্তচাপের একটি কারণ হতে পারে, কিন্তু চিনি বাদ দিয়ে চা খেলে এই ঝুঁকি কমে যায়।
  • ৯. বাড়তি শক্তি এবং মনোযোগঃ চায়ে থাকা ক্যাফেইন মস্তিষ্ককে সতেজ করে এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করে। চিনি ছাড়া চা খেলে মনোযোগের জন্য এটি আরও কার্যকরী হতে পারে, কারণ অতিরিক্ত চিনি শরীরকে ক্লান্ত বা অস্থির করে দিতে পারে।
  • ১০. দাঁতের স্বাস্থ্যঃ চিনি দাঁতের ক্ষতির একটি বড় কারণ হতে পারে, বিশেষত এটি দাঁতে প্লাক তৈরি করতে সাহায্য করে। চিনি ছাড়া চা খেলে দাঁতের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
  • ১১. গলাব্যথা এবং সর্দি-কাশি কমানোঃ চিনি ছাড়া গরম চা গলা এবং শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যেও উপকারিতা এনে দিতে পারে। এটি গলাব্যথা এবং সর্দি-কাশি কমাতে সহায়ক হতে পারে, কারণ এটি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণাবলী প্রদান করে।
চিনি ছাড়া চা খাওয়া স্বাস্থ্যকর এবং অনেক দিক থেকে উপকারী। এটি আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং কিছু সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা থেকেও রক্ষা করে। তবে, আপনি যদি চায়ের স্বাদে কিছু পরিবর্তন চান, তবে কম চিনি বা প্রাকৃতিক মিষ্টির বিকল্প ব্যবহার করতে পারেন, যেমন মধু বা স্টিভিয়া।

রং চা খেলে কি গ্যাস হতে পারে

রং চা খেলে কি গ্যাস হতে পারে এগুলো বিষয়ে আমরা অনেকে জানিনা। এগুলো বিষয়ে জানার জন্য ইন্টারনেটের খোঁজাখুঁজি করে থাকে তো চলুন জেনে নেওয়া যাক। হ্যাঁ, রং চা (ব্ল্যাক টি) খেলে কিছু মানুষের পেটে গ্যাস হতে পারে। এর কারণ কিছুটা তাত্ক্ষণিক এবং কিছুটা দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। নিচে এই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হলোঃ 
 
  • ১. ট্যানিনসঃ রং চা'তে ট্যানিনস নামক একটি যৌগ থাকে, যা পেটের এসিডিটি বাড়াতে পারে এবং গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ট্যানিনস অতিরিক্ত এসিড উৎপন্ন করতে পারে, যা পেটে অস্বস্তি বা গ্যাস সৃষ্টি করতে পারে।
  • ২. ক্যাফেইনঃ রং চা'তে ক্যাফেইন থাকে, যা পেটের অ্যাসিড রিলিজকে উদ্দীপিত করতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ পেটের গ্যাস এবং অম্বল সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত যদি এটি খালি পেটে খাওয়া হয়।
  • ৩. অতিরিক্ত চা খাওয়াঃ অতিরিক্ত রং চা খাওয়া গ্যাসের সৃষ্টি করতে পারে, কারণ এটি পেটের অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  • ৪. হজমের সমস্যাঃ কিছু মানুষের পেটের গ্যাস তৈরির প্রবণতা থাকে, যাদের হজম ব্যবস্থা একটু দুর্বল। তাদের জন্য রং চা খাওয়ার পর গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
  • ৫. খালি পেটে চা খাওয়াঃ খালি পেটে রং চা খেলে এটি পেটের এসিড বাড়াতে পারে এবং গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই রং চা খাওয়ার আগে কিছু খাবার খেয়ে নেয়া ভালো।
  • ৬. সামাজিক এবং স্বাস্থ্যগত পরামর্শঃ যদি আপনি নিয়মিত রং চা খান এবং গ্যাসের সমস্যা অনুভব করেন, তবে এটি কমিয়ে আনা উচিত বা চা খাওয়ার সময় খাবার খেতে পারেন।
এছাড়া, গ্যাসের সমস্যা কমাতে গরম জল পান বা মিষ্টি বাদ দিয়ে চা পান করার চেষ্টা করতে পারেন।
অতএব, রং চা খেলে গ্যাস হতে পারে, তবে এটি সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য নয়। যদি গ্যাসের সমস্যা গুরুতর হয়, তবে পেশাদার স্বাস্থ্য পরামর্শ নেওয়া উচিত।

রং চা খেলে কি ঘুম কম হয় 

রং চা খেলে কি ঘুম কম হয় এগুলো বিষয়ে অনেকেই জানিনা, কিন্তু এগুলো বিষয় অনেকেই জানতে চাই। হ্যাঁ, রং চা খেলে ঘুম কম হতে পারে, কারণ এতে ক্যাফেইন থাকে। ক্যাফেইন স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে, যা জাগ্রত রাখে এবং ঘুম আসতে দেরি করাতে পারে। বিশেষ করে যদি রাতে ঘুমানোর আগে রং চা পান করা হয়, তাহলে এটি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

তবে, চায়ের প্রভাব ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। কারও ক্ষেত্রে এটি বেশি প্রভাব ফেলতে পারে, আবার কেউ সহজেই ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। যদি আপনি দেখেন যে রং চা খেলে আপনার ঘুমের সমস্যা হচ্ছে, তাহলে সন্ধ্যার পর এটি এড়িয়ে যাওয়া ভালো। 

চা খেলে কি স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে 

চা খেলে কি স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে এগুলো বিষয় বিস্তারিত জেনেনি। চা সাধারণত পরিমিত মাত্রায় পান করলে উপকারী, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কিছু স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। নিচে কয়েকটি সম্ভাব্য ক্ষতির দিক তুলে ধরা হলোঃ
  • ১. অতিরিক্ত ক্যাফেইনের প্রভাবঃ চায়ে ক্যাফেইন থাকে, যা অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে অনিদ্রা, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, উদ্বেগ, মাথাব্যথা, ও উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  • ২. হজমের সমস্যাঃ চায়ে থাকা ট্যানিন পাকস্থলীর অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, যা অম্বল, গ্যাস্ট্রিক, পেট ব্যথা বা কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করতে পারে।
  • ৩. আয়রন শোষণে বাধাঃ ট্যানিন শরীরে আয়রন শোষণে বাধা দেয়, যা দীর্ঘমেয়াদে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়ার কারণ হতে পারে, বিশেষ করে যদি খাবারের সাথে চা পান করা হয়।
  • ৪. দাঁতের সমস্যাঃ অতিরিক্ত চা পান করলে দাঁতে দাগ পড়তে পারে ও বিবর্ণতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে চিনি মিশিয়ে চা খেলে দাঁতের ক্ষয়ও হতে পারে।
  • ৫. হরমোনের ভারসাম্যহীনতাঃ অতিরিক্ত ক্যাফেইন কিছু মানুষের ক্ষেত্রে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে, যা পিরিয়ড অনিয়মিত হওয়া বা হরমোন সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
  • ৬. ওজন বৃদ্ধি ও অন্যান্য সমস্যাঃ যদি চায়ে বেশি চিনি, দুধ বা অন্যান্য ক্যালোরিযুক্ত উপাদান মেশানো হয়, তবে তা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। এছাড়া খালি পেটে চা খেলে বমি বমি ভাব বা দুর্বলতা হতে পারে।
পরামর্শ
  • দিনে ২-৩ কাপের বেশি চা না খাওয়াই ভালো।
  • খাবারের সাথে বা খালি পেটে চা না খাওয়াই উত্তম।
  • চায়ে কম চিনি ব্যবহার করা ভালো।
  • ক্যাফেইন সংবেদনশীল ব্যক্তিদের বিকেলের পর চা না খাওয়া উচিত।
পরিমিত মাত্রায় চা পান করলে এটি উপকারী, তবে অতিরিক্ত চা খেলে এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে।

শেষ কথাঃ লাল চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

লাল চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেনা। আর আমি এই আর্টিকেলে এই সমস্ত কথা বলে দিয়েছি। আপনি যদি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়েন তাহলে সে বুঝতে পারবেন। এইরকম আরো আর্টিকেল পেতে এই ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। ধন্যবাদ আজ এতটুকুই।   

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এসআর এটুজেড এরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।;

comment url